লেবানন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও চিরশত্রু ইরানের প্রতি নজরদারি আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, আজ বুধবার (২৭ নভেম্বর) ভোর থেকেই লেবাননে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হচ্ছে।
নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিসভা যুদ্ধবিরতি অনুমোদন করার পরে জো বাইডেন হোয়াইট হাউস থেকে এক ঘোষণায় বলেন, স্থানীয় সময় ভোররাত ৪টা থেকে (গ্রিনিচ মান সময় ভোররাত ২টা) কার্যকর হচ্ছে হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি। খবর এএফপির।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকা সংঘাতের পর ইরানপন্থি মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কার্যকর করতে চাপ দিয়ে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাতিসংঘ ও জি-সেভেনের দেশগুলো।
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও সামরিক সহায়তা প্রদানকারী যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধবিরতিকে লেবাননের জন্য ‘ভালো সংবাদ’ ও ‘নতুন শুরু’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতির এই চুক্তিতে পৌঁছাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে তার সংশ্লিষ্টতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির এই প্রস্তাবটির পক্ষে মন্ত্রিসভার ১০ সদস্য এবং বিপক্ষে একজন ভোট দেয়।
জো বাইডেন ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, এই যুদ্ধবিরতি ইসরায়েলকে হিজবুল্লাহর হাত থেকে রক্ষা করবে এবং একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজে সহায়তা করবে। এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, জাতিসংঘ ও ফ্রান্স যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
এদিকে, ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় ভোটগ্রহণের আগে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, ‘লেবাননে কী ঘটে, তার ওপর নির্ভর করছে যুদ্ধবিরতি কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে।’
লেবাননের রাজধানী বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে বিমান হামলা ও শহরজুড়ে ব্যাপক অভিযানের পরপর নেতানিয়াহুর এই ঘোষণা প্রকাশ করা হয়। গত সেপ্টেম্বরে স্থল অভিযান চালানোর জন্য ইসরায়েল সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে। এদিকে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে ও শহরের দক্ষিণ উপকণ্ঠের বেশকিছু এলাকা থেকে স্থানীয় অধিবাসীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।
অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি লোবনন ভিত্তিক মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, বৈরুতে প্রাণঘাতী হামলার জবাব দিতে ইসরায়েলের তেল আবিব শহরের স্পর্শকাতর সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে তারা।
যুদ্ধবিরতির আলোচনায় হিজবুল্লাহ সরাসির অংশ নেয়নি। লেবাননের পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরি তাদের পক্ষে আলোচনায় মধ্যস্থতা করেন।
খুলনা গেজেট/এনএম